![বীরভূম জেলা সম্পর্কিত জিকে প্রশ্ন উত্তর](https://swapno.org/wp-content/uploads/2023/06/বীরভূম-জেলা-সম্পর্কিত-জিকে-প্রশ্ন-উত্তর-1024x576.jpg)
আয়তন | 4545বর্গ কিলোমিটার (1755 বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা | 35,02,404 জন মোট |
জনসংখ্যার ঘনত্ব | 770/বর্গকিলোমিটার (2000/বর্গমাইল) |
সাক্ষরতার হার | 70.68% |
লিঙ্গ অনুপাত | 956 |
প্রশাসনিক বিভাগ | বর্ধমান |
সদর দপ্তর | সিউড়ি |
লোকসভা কেন্দ্র | 2 টি; বীরভূম ও বোলপুর |
বিধানসভা কেন্দ্র | 11 টি |
মহুকুমা | 3টি; সুরি সদর, বোলপুর ও রামপুরহাট |
পৌরসভা | 6 টি |
ব্লক | 19 টি |
থানা | 28 টি |
বীরভূম নামটির উৎপত্তি ও নামকরণের ইতিহাস: বীরভূম নামটি সম্ভাব্য উৎস “বীরভূমি” শব্দটি, যার অর্থ” বীরের দেশ”। অন্য একটি মতে, বাগদী রাজা বীর মল্লের নাম অনুসারে এই জেলার নামকরণ করা হয়েছে। বীর মল্ল ১৫০১ থেকে ১৫৫৪ সাল পর্যন্ত এই জেলা শাসন করেছিলেন। আবার কেউ কেউ মনে করেন, সাঁওতালি ভাষায় বীর শব্দের অর্থ হলো বন, অর্থাৎ বীরভূম শব্দের অর্থ হলো বনভূমি। পরবর্তীকালে 1820 সালের বিভিন্ন জায়গা থেকে বিভক্ত হয়ে নতুন করে বর্তমান এই বীরভূম জেলার আত্মপ্রকাশ ঘটে।
ভৌগলিক সীমানা: বীরভূম জেলার ভৌগলিক সীমানা হল উত্তরে মালদহ জেলা, দক্ষিনে বর্ধমান জেলা, পূর্বে মুর্শিদাবাদ জেলা ও পশ্চিমে ঝাড়খন্ড রাজ্য।
নদ-নদী: বীরভূম জেলার উল্লেখযোগ্য নদ নদী গুলি হল-ব্রাহ্মণী ,অজয় , হিংলো, কোপাই, দ্বারকা, কোপাই ও ময়ূরাক্ষী প্রভৃতি।
ভাষাসমূহ: বাংলা ভাষা হলো সর্বাধিক প্রচলিত ভাষা।বাঙালিরা ছাড়াও সাঁওতাল ও আরও 10 টি উপজাতি এই জেলায় বসবাস করে। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো মহালি, ওরাও।
কৃষিজ ফসল: ধান হলো এই জেলার প্রধান কৃষিজ ফসল। এছাড়াও তুলা ও রেশম চাষে বিখ্যাত।
শিল্প: এই জেলার অন্যতম ভারী শিল্পকেন্দ্র হলো বক্রেশ্বর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র। এছাড়াও অন্যান্য শিল্পগুলো হলো তাঁত, বয়ন, চালকল, তৈলবীজ কল, লাক্ষা উৎপাদন,পাথর খনি, ধাতুশিল্প ও মৃৎ শিল্প।
খনিজ সম্পদ: ভারতে অবস্থিত কয়লাক্ষেত্র গুলির মধ্যে অন্যতম হলো বীরভূম কয়লাক্ষেত্র। এই কয়লা ক্ষেত্রে আনুমানিক ছয় বিলিয়ন টন কয়লার সংরক্ষণ রয়েছে।
বীরভূম জেলা সম্পর্কিত প্রশ্ন উত্তর
1) বীরভূম জেলা কবে প্রতিষ্ঠিত হয়?
উত্তর) 1820 সালে।
2) বীরভূম জেলার সদর শহরের নাম কি?
উত্তর) সিউড়ি।
3) একটি কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম লেখ?
উত্তর) বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়।
4) বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কত সালে স্থাপিত হয়?
উত্তর) ১৯৫১ সালে।
5) বীরভূম জেলায় কয়টি পলিটেকনিক কলেজ আছে?
উত্তর) একটি (শান্তিনিকেতন ইনস্টিটিউট অফ পলিটেকনিক)।
6) বীরভূম জেলার ভূপ্রকৃতি কিরূপ?
উত্তর) রুক্ষ রাঢ় অঞ্চলের অন্তর্গত।
7) বীরভূম জেলার মাটির প্রকৃতি কিরূপ?
উত্তর) গণ্ডয়ানা বৈশিষ্ট্যের ল্যাটেরাইট মৃত্তিকা।
8) মোহাম্মদ বাজার কিসের জন্য বিখ্যাত?
উত্তর) চিনামাটির জন্য।
9) বক্রেশ্বর কী জন্য বিখ্যাত?
উত্তর) উষ্ণ প্রস্রবণ এর জন্য।
10) মামা ভাগ্নে পাহাড় কি ধরনের পাহাড়?
উত্তর) ক্ষয়জাত পাহাড়।
11) মামাভাগ্নে পাহাড়টি কী শিলায় গঠিত?
উত্তর) গ্রানাইট ও নিস ।
12) কোন নদীর তীরে বোলপুর অবস্থিত?
উত্তর) কোপাই নদীর তীরে।
13) শান্তিনিকেতনে রবীন্দ্রনাথের স্মৃতি বিজড়িত প্রতিষ্ঠানটির নাম কী?
উত্তর) বিশ্বভারতী।
14) বীরভূমে কতগুলি প্রাথমিক স্কুল আছে?
উত্তর) ২৩৭টি।
15) এই জেলায় কতগুলি উচ্চ বিদ্যালয় আছে?
উত্তর) ২৫৬টি।
16) বীরভূমে কতকগুলি উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয় আছে?
উত্তর) ১১০টি।
17) বীরভূমে কতগুলি উচ্চ প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে?
উত্তর) ১০টি।
18) এই জেলায় শিশু শিক্ষা কেন্দ্রের সংখ্যা কত?
উত্তর) ৪৯৫টি।
19) বীরভূম জেলার কোথায় সবচেয়ে কম বৃষ্টিপাত হয়?
উত্তর) ময়ূরেশ্বরে।
20) বীরভূম জেলা উল্লেখযোগ্য দর্শনীয় স্থান এর নাম?
উত্তর) নলহাটেশ্বরী সতী পীঠ, তারাপীঠ, শান্তিনিকেতন, বক্রেশ্বর র তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্ম ভিটে।
21) বীরভূম জেলায় অবস্থিত কিছু উল্লেখযোগ্য পাহাড়ের নাম?
উত্তর) মামা ভাগ্নে পাহাড়, মথুরখালী পাহাড়, কাটাপাহাড়, কাঙ্গাল পাহাড়।
22) বীরভূম জেলার কয়েকজন উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্বের নাম বলো?
উত্তর) কবি চণ্ডী দাস,কবি জয়দেব, সাঁওতাল বিদ্রোহী নেতা সিধু- কানু, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কথা সাহিত্যিক তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়, সাধক রামদেব ও নোবেল অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন প্রমুখ ব্যক্তিবর্গ।
23) বীরভূম জেলা ডিম দুধ উৎপাদনে কততম স্থান অধিকার করেছে?
উত্তর) ডিম উৎপাদনে তৃতীয় আর দুধ উৎপাদনে চতুর্দশ।
বীরভূম জেলার উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় ,বীরভূম মহাবিদ্যালয়, রামপুরহাট সরকারি মেডিকেল কলেজ, সিউড়ি বিদ্যাসাগর কলেজ, কবি জয়দেব মহাবিদ্যালয় প্রভৃতি।
বীরভূম জেলার কিছু বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ
1) প্রণব মুখোপাধ্যায়: ভারতের ত্রয়োদশ তম রাষ্ট্রপতি।
2) তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়: বিশিষ্ট লেখক ও উপন্যাসিক।
3) অমর্ত্য সেন: ভারতের বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার প্রাপক।
4) খরাজ মুখার্জি: অভিনেতা, গীতিকার ও সুরকার।
5) সুমিত্রা দেবী: হিন্দি ও বাংলা চলচ্চিত্র অভিনেত্রী।
6) বাসুদেব দাস বাউল: বাঙালি বাউল গায়ক।
7) শাহানা বাজপেয়ী: ভারতীয় বাঙালি গায়িকা, লেখিকা বর্তমানে অতি পরিচিত রবীন্দ্র সংগীত গায়িকা।
8) রাখাল চিত্রকর: পট শিল্পী।
বীরভূমের উল্লেখযোগ্য পর্যটন কেন্দ্র
1) তারাপীঠ: তারাপীঠ পশ্চিমবঙ্গের বীরভূমের রামপুরহাটের নিকটে একটি ছােট মন্দির শহর, এটি তান্ত্রিক মন্দির এবং এর সংলগ্ন শ্মশান মাঠের জন্য পরিচিত, যেখানে তান্ত্রিক অনুষ্ঠান হয়। তারাপীঠ সাধক বামাক্ষ্যাপার জন্যও বিখ্যাত।
2) বােলপুর-শান্তিনিকেতন: ভ্রমণে আগ্রহী ব্যক্তিদের জন্য এক সপ্তাহান্ত নিখুঁত গেটওয়ে গন্তব্য হল এই বােলপুর-শান্তিনিকেতন৷ এটি মহানগরের উদাসীন গতি এবং দূষণ থেকে দূরে একটি দূর্দান্ত মনােরম জায়গা। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় এই স্থানটির মূল আকর্ষণ।
3) বক্রেশ্বর উষ্ণ প্রস্রবণ এবং মহিষমর্দিনীর মন্দির: বীরভূম জেলার বক্রেশ্বরের মহিষমর্দিনীর মন্দির ভারতের ৫১টি শক্তিশালী পিঠগুলির মধ্যে একটি এবং বক্রেশ্বর আটটি হট স্প্রিংয়ের জন্য বিখ্যাত।
4) বল্লভপুর বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য: বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যটি ১৯৭৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। বনভূমি অঞ্চলটি অনেক উদ্ভিদ।এইঅভয়ারণ্যের প্রধান আকর্ষণ হল স্পটেড হরিণ এবং ব্ল্যাক বাক।
5) মামা ভাগনেপাহাড়: আক্ষরিক অর্থে বোঝাতে গেলে এই পাথরের উদাহরণটি মানবসভ্যতার দ্বারা বহন করা অপরাধবোধের বোঝা বোঝায়। অল্প জনবসতিপূর্ণ জমির মধ্যে ধূসর রঙের গ্রানাইট পাথর অনেক পর্যটকদের মধ্যে জনপ্রিয়তা অর্জন করে এবং ক্রমশ এই পাথর, মামা-ভাগনে পাহাড় নামে পরিচিত হয়।
6) সোনাঝুরি: খোয়াই সোনাঝুরি বন হল বীরভূমের একটি অপূর্ব জায়গা যা আপনাকে নিখুঁত প্রশান্তি দেয়। শান্ত গ্রামীণ পরিবেশ এবং সবুজের মাঝে লুকিয়ে থাকা ঘন জঙ্গল বাংলা এবং বাইরের অনেক দর্শককে আকর্ষণ করে।
7) প্রকৃতি ভবন: প্রকৃতি ভবন বা নেচার আর্ট মিউজিয়াম শান্তিনিকেতনের বল্লভপুর এলাকার একটি রত্ন। জাদুঘরটি প্রকৃতির ঐশ্বর্য এবং সৌন্দর্যের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে। এটিতে কিছু অনুপ্রেরণাদায়ক ভাস্কর্য এবং শিল্পের উদাহরণ রয়েছে এবং শুকনো কাঠ, প্রাকৃতিক ড্রিফ্টউড এবং ধাতুর অন্দর প্রদর্শন রয়েছে।
8) নন্দন আর্ট গ্যালারি ও মিউজিয়াম: এই জাদুঘরটি কলা ভবনের অংশ, এতে সঙ্গীত ভবন এবং কালো বাড়িও রয়েছে। রবি ঠাকুরের অনুরোধে, রামকিঙ্কর বাইজ, নন্দলাল বসু এবং সুরেন্দ্রনাথ কর-এর তত্ত্বাবধানে ১৯২৩ সালে কলা ভবন নির্মিত হয়েছিল।
Thank you❤❤
মালদা জেলা সম্পর্কে pdf দিলে উপকৃত হতাম 🙏🙏