Saturday, May 18, 2024
Homeজিকেপুরুলিয়া জেলা সম্পর্কিত জিকে প্রশ্ন ও উত্তর

পুরুলিয়া জেলা সম্পর্কিত জিকে প্রশ্ন ও উত্তর

পুরুলিয়া জেলা সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ সাধারণ জ্ঞান প্রশ্ন উত্তর

পুরুলিয়া জেলা সম্পর্কিত জিকে প্রশ্ন ও উত্তর
আয়তন6259 বর্গকিলোমিটার
জনসংখ্যা29,27,965 জন মোট
জনসংখ্যার ঘনত্ব468/বর্গকিলোমিটার
সাক্ষরতার হার65.38%
লিঙ্গ অনুপাত940 জন
প্রশাসনিক বিভাগমেদনীপুর
সদর দপ্তরপুরুলিয়া
লোকসভা কেন্দ্র1 টি
বিধানসভা আসন9 টি
পৌরসভা3
ব্লক20
থানা26 টি

পুরুলিয়া নামটির উৎপত্তি ও নামকরণের ইতিহাস: পুরুলিয়া নামটি কিভাবে হলো সেই সম্পর্কে একটি মতবাদ আছে ,যেমন একটি মতবাদ হল-এই নামটি আসছে “পেরুয়া “বা “পেরুলা “থেকে। পেরুল একটি দ্রাবিড় শব্দ যার অর্থ হলো নদী বা জল। দাবির ভাষায় পারো শব্দের অর্থ নুড়ি বা পাথরের চাই এবং লা বা ওলা শব্দের অর্থ হল মধ্যে। তাহলে সব মিলিয়ে পুরুলিয়া শব্দের অর্থ হলো – পাথরের ডাঙ্গার মধ্যে অবস্থিত গ্রাম। বিশিষ্ট ঐতিহাসিক সুভাষ মুখোপাধ্যায় এর মতে পুরুলিয়া একসময় ‘পশুভূমি’ নামে পরিচিত ছিল। প্রাচীন কালে পুরুলিয়ার নাম ছিলো – বজ্রভূমি, ঝাড়িখন্ড ও মানভূম। বর্তমান পুরুলিয়া জেলার 1956সালের 1লা নভেম্বর সৃষ্টি হয়।

ভৌগলিক সীমানা: পুরুলিয়া ২৩º২০′ উত্তর অক্ষাংশ ও ৮৭º৫১′ পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থিত। জেলাররাজনৈতিক সীমানা উত্তরে, পশ্চিমে ও দক্ষিণে ঝাড়খণ্ড রাজ্য, উত্তর-পূর্বে বর্ধমান, পূর্বে বাঁকুড়া  ও দক্ষিণ-পূর্বে ঝাড়গ্রাম এর সঙ্গে সংযুক্ত।

নদ- নদী: পুরুলিয়া জেলার উল্লেখযোগ্য নদী গুলিহলো – দামোদর, কংসাবতী, সুবর্ণরেখা, কুমারী।

স্বাভাবিক উদ্ভিদ: অরণ্য মূলত ক্রান্তীয় অরণ্য। এসব গাছগুলো বেশি দেখা যায় সেগুলি হল- শাল, পলাশ, শিমুল, হরিতকি হলুদ, বাঁশ, মহুয়া, জাম। এই অরণ্য দেখা যায় মূলত পাহাড় ও পাহাড়ের পাদদেশীয় অঞ্চলে।

কৃষিজ ফসল: ধান, গম, ভুট্টা, আলু, বিভিন্ন শাকসবজি ও তৈলবীজ উৎপাদিত হয়।

খনিজ সম্পদ: পুরুলিয়া জেলা হলো অন্যতম খনিজ সম্পদ সমৃদ্ধ এলাকা। এই জেলায় যে খনিজ সম্পদ গুলি পাওয়া যায় তা হলো – কয়লা, ফসফেট, চিনামাটি, ডলোমাইট, গ্রাফাইট প্রভৃতি।

পুরুলিয়া জেলা সম্পর্কিত প্রশ্ন ও উত্তর

1) আয়তনে পুরুলিয়া জেলা কততম স্থানে আছে?
উত্তর) পঞ্চম।

2) পুরুলিয়া জেলায় অবস্থিত বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের নাম?
উত্তর) সাঁওতালডিহি তাপবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র।

3) পুরুলিয়া জেলার কোথায় ছৌ নাচের দল ভালো?
উত্তর) বামানিয়া গ্রামে (কোটশিলা )।

4) একজন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ছৌ নিত্য শিল্পীর নাম কী?
উত্তর) গম্ভীর সিং মুড়া।

5) এই জেলার সর্বোচ্চ পাহাড়ের নাম ও উচ্চতা?
উত্তর) অযোধ্যা পাহাড়। উচ্চতা -650 মিটার।

6) পুরুলিয়ার প্রধান জনগোষ্ঠীর নাম কী?
উত্তর) সাঁওতাল ও কুড়মি।

7) সাঁওতালদের প্রধান দেবতা কে?
উত্তর) সিঞ্জা-বঙ্গা।

8) মহাতোরা কোন সম্প্রদায়ের?
উত্তর) কুড়মি।

9) পুরুলিয়া জেলার আয়তনের ছোট থানার নাম কী?
উত্তর) সাঁওতালডিহি।

10) পুরুলিয়া জেলায় কে শিল্পাশ্রম গঠন করেন?
উত্তর) নিবারণ চন্দ্র দাসগুপ্ত।

11) এই জেলায় কত খ্রিস্টাব্দে রেল লাইন তৈরি করা হয়?
উত্তর) 1889 খ্রিস্টাব্দে (রানীগঞ্জ থেকে আসানসোল লাইনটি পুরুলিয়া পর্যন্ত বাড়ানো হয়)।

12)এই জেলার অর্থকরী ফসল গুলির নাম লেখো?
উত্তর) তসর ও লাক্ষা পুরুলিয়া জেলার অর্থকারী ফসল।

13) সাহেব বাঁধের আয়তন কত?
উত্তর) 60 একর।

14) পুরুলিয়া জেলার মোট ভূমির প্রায় কত শতাংশ চাষযোগ্য?
উত্তর) প্রায় 80 শতাংশ।

15)এই জেলার মাটি কী প্রকৃতির?
উত্তর) ল্যাটেরাইট মৃত্তিকা।

16)এই জেলা ডিম ও দুধ উৎপাদনে কোন স্থান অধিকার করে?
উত্তর) ডিম উৎপাদনে 14তম ও দুধ উৎপাদনে 17 তম স্থান।

17) এই জেলার প্রধান শিল্প গুলো কী কী?
উত্তর) গালা শিল্প, তসর শিল্প ,বিদ্যুৎ শিল্প, ইস্পাত শিল্প।

18) পুরুলিয়া জেলার কয়েকটি পাহাড়ের নাম লেখো?
উত্তর) অযোধ্যা, বাঘমুন্ডি, ভান্ডারী, পরশ পাহাড়, গুরুমা পাহাড়।

19) পুরুলিয়া জেলার কিছু দর্শনীয় স্থানের নাম?
উত্তর) রামকৃষ্ণ মন্দির, রাকাব বন, অযোধ্যা পাহাড়, গড় পঞ্চকোট।

20) পুরুলিয়া জেলা কী কারণে বিশ্ব বিখ্যাত?
উত্তর) ছৌ নাচের জন্য।

পুরুলিয়া জেলার বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের নাম

1) অতুলচন্দ্র ঘোষ: গান্ধীবাদী স্বাধীনতা সংগ্রামী, লোকসেবক সংঘের প্রতিষ্ঠাতা।

2) লাবণ্য প্রভা ঘোষ: মানভূমেরজননী হিসেবে পরিচিত। একজন ভারতীয় মুক্তিযোদ্ধা।

3)গম্ভীর সিং মুড়া: একজন উচ্চ শ্রেণীর ছৌ নাচ শিল্পের প্রকাশক। পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত।

4) মিহির সেন: ১৯৫৮ সালে ইংলিশ চ্যানেলে সাঁতার কাটা প্রথম ভারতীয়।

5) সারদা প্রসাদ কিস্কু: সাঁওতালি ভাষার একজন জনপ্রিয় কবি।

6) সিন্ধু বালা দেবী: ঝুমুর গানের একজন শীর্ষস্থানীয় শিল্পী।

পুরুলিয়া জেলার কিছু দর্শনীয় স্থান

1) গাজাবুরু পাহাড়: গাজা বুরু পাহাড় শহরটির পাখির চোখ দেখার জন্য দর্শণীয় স্থান গুলির মধ্যে একটি। পাহাড়ে অনেক ছোট ছোট মন্দির উপাসনালয় আছে, এটি পুরুলিয়ায় আসা তীর্থযাত্রীদের জন্য একটি দর্শণীয় স্থান।

2) রামকৃষ্ণ মন্দির: এই মন্দিরটি পুরুলিয়ার সবচেয়ে জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থানগুলির মধ্যে একটি। মন্দিরটি 19 শতকের রহস্যবাদী এবং আধ্যাত্মিক নেতা রামকৃষ্ণ পরমহংসকে উৎসর্গ করা হয়েছে। মন্দির কমপ্লেক্সে একটি যাদুঘর এবং একটি গ্রন্থাগার।

3) রাকাব বন: কাশীপুরের শিকারের স্থান হিসাবে, কেশরগড় ব্রিটিশদের সাথে যুদ্ধ করে পুরুলিয়ার ধন লুট করার আগে রাকাব বন 16 ক্রোশের বন হিসাবে বিখ্যাত ছিল। এখানেই মহারাজাকে ফাঁসিতে
ঝুলানো হয়েছিল এবং দুর্গটি জেলার সমৃদ্ধ ইতিহাসের সাহসী সাক্ষী হয়ে আছে।

4) গড়পঞ্চকোট: গড়পঞ্চকোট আশেপাশের গ্রামাঞ্চলের অত্যাশ্চর্য 360-ডিগ্রি দৃশ্য দেখায়। এখানকার প্রধান আকর্ষণ হল ধ্বংসপ্রাপ্ত দুর্গ, যা একসময় একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত ফাঁড়ি ছিল। আজ, এটি পিকনিক এবং সূর্যাস্ত দেখার জন্য একটি জনপ্রিয় স্থান।

5) অযোধ্যা পাহাড়: অযোধ্যা পাহাড় এবং ফরেস্ট রিজার্ভ এলাকা হল পুরুলিয়ার সবচেয়ে জনপ্রিয় স্থানগুলির মধ্যে একটি। এই পাহাড়টির উচ্চতা ৬৯৯ মিটার। পাহাড়ের চূড়াটি আশেপাশের গ্রামাঞ্চলের চমত্কার দৃশ্য দেখায় এবং বন সংরক্ষিত বিভিন্ন বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল। আপনি যদি এই সমস্ত কিছু থেকে দূরে সরে যাওয়ার এবং কিছু শান্ত উপভোগ করার জন্য একটি জায়গা খুঁজছেন তবে এটি আপনার জন্য জায়গা।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Recent Posts

Most Popular